Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ছবি
শিরোনাম
মজিদ বাড়িয়া বসজিদ, পটুয়াখালী।
বিস্তারিত

মজিদ বাড়িয়া মসজিদঃ

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম নিদর্শন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়িয়া শাহী জামে মসজিদ(Majidbaria Mosjid)। সাড়ে ৫শ বছর পূর্বে সুলতানী শাসনামলে স্থাপিত এ শাহী মসজিদটি, যা আজও স্মরণ করিয়ে দেয় মুসলিম স্থাপত্য ও ঐতিহ্যের কথা। আর এ মসজিদের নামানুসারে এলাকার নাম হয়েছে মসজিদবাড়িয়া। পরে মজিদ নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান মসজিদবাড়িয়ার পরিবর্তে ইউনিয়নের নাম মজিদবাড়িয়া করেন বলে জানা যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইলিয়াছ শাহী বংশের এক স্বাধীন সুলতান ছিলেন রুকনদ্দিন বরবক। তিনি ১৪৪৯ থেকে ১৪৭৪ সাল পর্যন্ত বৃহত্তম বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন। তার শাসনামলের অমরকীর্তি ১৪৬৫ সালে নির্মিত হয় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহাসিক মজিদবাড়িয়া এ শাহী মসজিদ। আর উজিয়ল খান নামে এক মিস্ত্রি মসজিদটির নির্মাণকাজ করেন।

মসজিদে তিনটি দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য খচিত মেহরাব, পূর্বদিকে তিনটি খিলান পথ এবং ৬টি আটকোনার মিনারসদৃশ পিলার রয়েছে। একটি বারান্দাযুক্ত মসজিদটির পূর্ব-উত্তর ও দক্ষিণ দিকে দুটি করে জানালা রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বর্তমানে দরজা-জানালার কপাট ও পিলারগুলোর অস্তিত্ব ধ্বংসের শেষ পর্যায় পৌঁছেছে। বিশাল একটি গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদটি কোনো রড-সিমেন্ট ছাড়াই চুনা-সুরকি ও পোড়ামাটির ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের দেয়াল প্রায় ৭৫ইঞ্চি পুরো। আর মসজিদের ভিতরদিকে রয়েছে নানান কারুকার্য খচিত মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের প্রাচীনতম নিদর্শন। যা চোখে না দেখলে এর অকৃত্রিম সৌন্দর্য বোঝা সত্যিই অসম্ভব।

ধারণা করা হচ্ছে, প্রত্যন্ত ওই এলাকায় দীর্ঘদিন জনবসতি না থাকায় মসজিদটি অব্যবহূত হয়ে পড়ে আছে। বনজঙ্গলে ঘিরে হয়ে যায় এক ভুতুড়ে এলাকা। ১৯৬০ সালে ভূমি জরিপ করতে বনজঙ্গল পরিষ্কার করা হলে মসজিদটি মানুষের নজরে আসে। সৃষ্টি হয় মানুষের মাঝে কৌতূহল। কেউ মনে করেন এটি আল্লাহর বিশেষ কুদরতে সৃষ্টি হয়েছে। আবার কেউ বলেন, এটি মাটির মধ্য থেকে আল্লাহর কুদরতে উঠছে।
বর্তমানে মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে মসজিদের অনেক সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে। দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে আর অল্প দিনেই বাদবাকিটা শেষ হয়ে যাবে। তাই এলাকাবাসীর দাবি, মসজিদটি দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের ইতিহাস, মুসলমানদের অবদান ও ঐতিহাসিক নিদর্শন আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সরকার দৃষ্টি দেবে।